‘কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস আইন ২০১৬’-এর খসড়া নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। এতে নতুন তিনটি ধারা সংযোজন করা হয়েছে। কস্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টের নামে প্রতারণায় শাস্তি বাড়ানো হয়েছে। সচিবালয়ে গতকাল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে মন্ত্রিসভার নিয়মিত বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়। এ ছাড়া বৈঠকে নজরুল ইনস্টিটিউট ও ক্রীড়া পরিষদ আইনের খসড়ারও নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বৈঠক শেষে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম প্রেস ব্রিফিংয়ে এ কথা জানান।
শফিউল আলম বলেন, কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টসদের জন্য আইসিএমএবি (দি ইনস্টিটিউট অব কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অব বাংলাদেশ) নামে যে প্রতিষ্ঠান আছে তা ১৯৭৭ সালের কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্টস অধ্যাদেশের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। এ আইন আরও কয়েকবার সংশোধন করা হয়েছে। সামরিক শাসনামলে আইনটি হওয়ায় এটি সংশোধন করে নতুন করে আইনে পরিণত করার বাধ্যবাধকতা আছে। মূলত আগের আইনটিকেই যথাসম্ভব রেখে সময়ের প্রয়োজনে সংশোধন করা হয়েছে। আইনে রিপোর্টিং কাউন্সিলের তত্ত্বাবধান, সদস্যদের মানদ- প্রতিপালন-সংক্রান্ত ত্রুটি ও ইংরেজিতে অনূদিত পাঠÑ এই তিনটি নতুন ধারা সংযোজন করা হয়েছে। এ ছাড়া কিছু সংজ্ঞায় পরিবর্তন আনা হয়েছে এবং প্রতারণায় শাস্তি বাড়ানো হয়েছে।
মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, প্রতারণামূলকভাবে ইনস্টিটিউটের (আইসিএমএবি) সদস্য দাবি করলে বর্তমান আইনে ৬ মাসের কারাদ- ও ১ থেকে ৫ হাজার টাকা জরিমানার বিধান আছে, অনুমোদিত খসড়ায় অর্থদ-টা ৫ হাজার থেকে ৩ লাখ টাকা করা হয়েছে। তবে কারাদ- ৬ মাসই আছে। তিনি বলেন, ‘আইসিএমএবি’র নাম ব্যবহারের শাস্তি প্রথম দফায় ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত অর্থদ-, পরে আবার একই অপরাধ করলে এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদ- হতে পারে। চলমান আইনে এই জরিমানা ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা রয়েছে।
সচিব আরও বলেন, যথাযথ যোগ্যতা ও সনদ না থাকলে কেউ এ পেশায় (কস্ট অ্যান্ড ম্যানেজমেন্ট অ্যাকাউন্ট্যান্ট) লিপ্ত হতে পারবেন না। যদি হন প্রথম দফায় ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা, পরবর্তী সময়ে প্রতিবার দ-িত হওয়ার ক্ষেত্রে এক লাখ টাকা পর্যন্ত অর্থদ-। এক্ষেত্রে আগে ছিল ১ হাজার থেকে ৫ হাজার টাকা। অযোগ্য ব্যক্তিদের দলিলে স্বাক্ষরের শাস্তি প্রথম দফায় ৫০ হাজার টাকা। পরবর্তী প্রতিবারের জন্য ১ লাখ টাকা। আগে ছিল প্রথম দফায় ১ হাজার টাকা পরবর্তী সময়ে ৫ হাজার টাকা।
নজরুল ইনস্টিটিউট আইন
গতকাল ‘নজরুল ইনস্টিটিউট আইন ২০১৬’-এর খসড়ারও নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, এতদিন ধরে নজরুল ইনস্টিটিউট ১৯৮৪ সালের অধ্যাদেশ অর্থাৎ মার্শাল ল আমলের আইন দিয়েই চলে আসছে। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী আইনটি পুনর্বিন্যাস করে আনা হয়েছে। আগের আইনের সঙ্গে তেমন কোনো বড় পার্থক্য নেই। ছোট ছোট কয়েকটি বিষয় সংযোজন করা হয়েছে।
জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন
মন্ত্রিসভা বৈঠকে ‘জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ আইন ২০১৬’-এর আইনের খসড়ারও নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। শফিউল আলম বলেন, মূলত ১৯৭৪ সালে দি বাংলাদেশ স্পোর্টস কাউন্সিল অ্যাক্ট হয়। এর পরে এর পাঁচটি সংশোধন হয়। সংশোধনগুলো মূলত মার্শাল ল আমলের। এ জন্য এটি পুনর্বিন্যাস করে নতুন আইনে রূপান্তর করা হয়েছে। এতে বড় কোনো পরিবর্তন আনা হয়নি, আগের আইনটি বাংলায় অনুবাদ করা হয়েছে।
সচিব বলেন, জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের চেয়ারম্যান হবেন যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী, প্রতিমন্ত্রী বা উপমন্ত্রী; অর্থাৎ যিনি দায়িত্বে থাকবেন তিনিই।
সৌজন্যে ঃ দৈনিক আমাদের সময়।